পরিবেশ বলতে কি বোঝায় ?
পরিবেশ বলতে বোঝায় আমাদের চারপাশে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকারী এবং প্রভাববিস্তারকারী সমস্ত সজীব ও জড় পদার্থের সমষ্টিকে ।
পরিবেশের উপাদানঃ
পরিবেশের উপাদানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় -ক)জৈব উপাদান খ)অজৈব উপাদান
জৈব উপাদানঃএর মধ্যে পড়ে উদ্ভিদ,প্রানী ও বিভিন্ন আণুবীক্ষণিক জীব ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ।
অজৈব উপাদানঃএর মধ্যে পড়ে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক জড় পদার্থ । উদাহরণ স্বরূপ ১)আবহাওয়াজনিত উপাদান(আলোক, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ু ও বায়ুর মধ্যে থাকা জলীয় বাষ্প ইত্যাদি )
২)ভূ পৃষ্ঠের উপরিতলের উপাদান(মৃত্তিকা, পাহাড়,পর্বত, নদনদী ইত্যাদি) ।
পরিবেশ বিপর্যয়ঃ
প্রকৃতি সৃষ্টঃ যে সব ঘটনা বা দুর্ঘটনা প্রাকৃতিক ভাবে ঘটে এবং পরিবেশের ও মানব সভ্যতার ক্ষতি করে তাকে বলা হয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় । প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের
উদাহরণ হল - বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি ।
মনুষ্য সৃষ্টঃ মানুষের বিভিন্ন কাজের ফলেও পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে । মানুষের দ্বারা সৃষ্ট ভৌত বা প্রাকৃতিক
বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে ভুমিক্ষয় ,ভুমি ধস এমনকি মৃদু ভূমিকম্পও(বিভিন্ন জলাধারে জল আটকে রাখার ফলে )।
মানুষের দ্বারা সৃষ্ট জৈব বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে অরন্যনিধন(বৃক্ষছেদন),জনবিস্ফরন(অত্যধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি) ।
মানুষের দ্বারা সৃষ্ট রাসায়নিক বিপর্যয়ের তালিকাটি দীর্ঘ । ভূপালের গ্যাস দুর্ঘটনা -১৯৮৪ সালে ৩র ডিসেম্বরের এই দুর্ঘটনায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায় ও অসুস্থ হয় দু লক্ষের বেশী ।
এর ফলে ওখানকার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় । ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আমেরিকার ফেলা পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের ফলে দু লক্ষ মানুষ মারা যায়
ও কয়েক লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ব ও নানা রোগের শিকার হয় । যার প্রভাব ওই সব অঞ্চলের বর্তমান প্রজন্মের মধ্যেও বিদ্যমান । এছাড়া আছে ১৯৯০ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধ রাশিয়ার চেরনোবিলের
পারমাণবিক কেন্দ্রের দুর্ঘটনা(১৯৮৪ সাল ২৮ এ এপ্রিল )ও সম্প্রতি জাপানের ফুকুসিমা ও দাইচির পারমাণবিক কেন্দ্রের দুর্ঘটনা (সুনামির কারনে সৃষ্ট) ইত্যাদি যাদের প্রভাবে পরিবেশ
বিপজ্জনক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ।
পরিবেশ সম্পর্কিত কিছু আবেদনঃ
- শক্তির অপচয় বন্ধ করুন । বাড়ি থেকে বেরনোর আগে আলো, পাখা, টি.ভি. ইত্যাদি মনে করে বন্ধ করুন । সামর্থ্য থাকলে সৌরশক্তির ব্যবহার করুন ।
- গাছ আমাদের পরম বন্ধু সুতরাং যথাসম্ভব গাছ কাটা থেকে বিরত থাকুন । পারলে বৃক্ষরোপণ করুন ও অন্যকে উৎসাহ দিন ।
- প্লাসটিকজাত পদার্থের ব্যবহার কমান । বাজারে যাওয়ার সময় ব্যাগ নিয়ে গেলে পলিব্যাগের ব্যবহার কমানো যায়। নালা নর্দমাতে প্লাস্টিক না ফেলে উপযুক্ত স্থানে ফেলুন ।
- বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন । পাশে নর্দমা বা কোথাও জল জমে থাকতে দেবেন না - এ থেকে মশার জন্ম হয় ।
- বাজী পোড়ান কমান ।
- রাস্তায় বেশীক্ষণ যানজট বা দীর্ঘ সময়ের সিগন্যাল থাকলে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে দিন ।